Aller au contenu principal

দোলমাবাহজে প্রাসাদ


দোলমাবাহজে প্রাসাদ


দোলমাবাহচে প্রাসাদ (তুর্কি: Dolmabahçe Sarayı দোল্‌মাবাহ্‌চে সারায়ি) ইস্তাম্বুলের বেসিকতাসে অবস্থিত একটি উসমানীয় প্রাসাদ, যা বসফরাস প্রণালির ইউরোপীয় তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত। ধারণা করা হয়, এই প্রাসাদ ১৮৫৩ সালে নির্মাণ করা হয়। এই প্রাসাদ ১৮৫৬-১৯২২ সাল পর্যন্ত উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। (ইলদিয প্রাসাদ অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ব্যবহৃত হয়েছিল)

ইতিহাস

দোলমাবাচে প্রাসাদ তৎকালীন উসমানীয় সাম্রাজ্যের ৩১তম সম্রাট সুলতান প্রথম আব্দুল মজিদের আদেশে নির্মাণ করা হয়। ১৮৪৩-১৮৫৬ সালের মধ্যে এটি নির্মিত হয়। হাজি সাইদ আগা এই প্রাসাদ নির্মাণের প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। যদিও এর স্থপতি হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন গারাবেত বালিয়ান, তাঁর পুত্র নিগোয়ায়োস বালিয়ান এবং এভানিস কালফা।

নির্মাণে খরচ হয়েছে পাঁচ মিলিয়ন অটোমান স্বর্ণমুদ্রা, বা ৩৫ টন সোনার, ক্যারেটের সমতুল্য। বর্তমান (২০২১) বাজারমূল্যে তা ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ। এই অর্থপরিমাণ তৎকালীন বার্ষিক কর-রাজস্বের প্রায় এক চতুর্থাংশের মত। প্রকৃতপক্ষে, নির্মাণের অর্থায়ন করা হয়েছিল অপকৃষ্টতার বিপুল পরিমাণ কাগজের অর্থের মাধ্যমে, সেইসাথে বিদেশী ঋণও নেওয়া হয়। এই বিশাল খরচ রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উপর একটি বিশাল বোঝা চাপিয়ে দেয় এবং অটোমান সাম্রাজ্যের অবনতিশীল আর্থিক পরিস্থিতির জন্য অবদান রাখে, যা শেষ পর্যন্ত অক্টোবর ১৮৭৫ এর পাবলিক ঋণ কে পরিশোধে অক্ষম করে দেয়, একই সাথে ১৮৮১ সালে ইউরোপীয় শক্তি সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ এর উপর আর্থিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফেলে।

প্রাসাদটি ১৮৫৬ সাল থেকে ১৯২৪ সালে খিলাফতের বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত ছয়জন সুলতানের বাসস্থান ছিল: এখানে বসবাসকারী শেষ রয়েল ছিলেন খলিফা আব্দুল মাজিদ এফেন্দি। একটি আইনের মাধ্যমে, যা ৩ মার্চ, ১৯২৪ সালে কার্যকর হয়েছিল, প্রাসাদটির মালিকানা নতুন তুর্কি প্রজাতন্ত্রের জাতীয় ঐতিহ্যে স্থানান্তরিত করে দেয়। মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক, তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি, গ্রীষ্মকালে প্রাসাদটিকে রাষ্ট্রপতির বাসভবন হিসাবে ব্যবহার করতেন এবং এখানে তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ প্রণয়ন করতেন। আতাতুর্ক তার চিকিৎসার শেষ দিনগুলি এই প্রাসাদে কাটিয়েছিলেন, সেখানেই তিনি ১০ নভেম্বর, ১৯৩৮ সালে মারা যান।

বর্তমানে, প্রাসাদটি তুরস্কের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি এর জন্য ব্যবহৃত হয় যা পরিচালনা করে মিল্লি সারাইলার দাইরে বাস্কানলিগি (জাতীয় প্রাসাদের অধিদপ্তর)।

অবস্থান

দোলমাবাহজের স্থানটি মূলত ছিল বসফরাস উপসাগর, যা অটোমান নৌবহরের নোঙর রাখার জন্য ব্যবহৃত হত। ধীরে ধীরে এলাকাটি ১৮ শতকের রাজউদ্যানে পরিণত হয়, যার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন অটোমান সুলতানগণ; এই বাগানই থেকেই মুলত "দোলমাবাহচে" (বাগানঘেরা) নামটি এসেছে, তুর্কি "দোলমা" অর্থ "ভরপুর" এবং "বাহচে" অর্থ "বাগান"। ১৮ এবং ১৯ শতকে এখানে বিভিন্ন ছোট ছোট গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ এবং কাঠের প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয় যা শেষ পর্যন্ত বেশকিতাশ ওয়াটারফ্রন্ট প্যালেস নামে একটি প্রাসাদ কমপ্লেক্সে পরিণত হয়। ১১০,০০০ মি এলাকাটির পূর্ব দিকে বসফোরাস অংশ, অন্যদিকে এর খাড়া মিনারটি পশ্চিমে ঘেরা, ৪৫,০০০ মি নতুন নির্মাণের পরে মনোব্লক দোলমাবাহচে প্রাসাদ বাগান কমপ্লেক্সের জন্য অপেক্ষাকৃত সীমিত জায়গা রয়ে যায় যা সাধারণত এমন একটি প্রাসাদকে ঘিরে থাকে।

গঠনশৈলি

এই প্রাসাদ মোট ১,১০,০০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত।

প্রাসাদটি তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত।

  • মাবেইন-ই হুমায়ুন (এই অংশ পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত)
  • মুয়ায়েদে সালোনু (বাণিজ্যিক হল)
  • হারেম-ই হুমায়ুন (সুলতানের পরিবারবর্গের বাসস্থান)

মূল প্রাসাদটির আয়তন ৪৫,০০০ বর্গ মিটার (১১.২ একর)। এই প্রাসাদে মোট ২৮৫ টি কক্ষ, ৪৬ টি হলরুম, ৬ টি রাজকীয় স্নানাগার (হামাম) এবং ৪৮ টি টয়লেট রয়েছে।

মেধল হল (প্রধান প্রবেশ)

এই প্রাসাদ দেখতে গেলে প্রথমেই মেধল হল পড়ে। এই হলরুম সমুদ্র ও তীরের সম্মুখভাগে অবস্থিত। এই রুমটি উসমানীয় সাম্রাজ্যের সভাকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হত।

রাজ্যের সচিবদের কক্ষ

মেধল হলের পরেই ডানদিকে তৎকালীন রাজ্যের হিসাবরক্ষকদের হল অবস্থিত। এই রুমটি “টাইল্ড রুম” হিসেবে পরিচিত। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মূল্যবান চিত্রশৈলি এই হলে রয়েছে, যা হলের দেয়ালে শোভা বৃদ্ধি করেছে।

মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের কক্ষ

মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক স্বাধীন তুরস্কের স্থপতি ও প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি এই প্রাসাদে তাঁর জীবনের শেষ সময়গুলো কাটান চিকিৎসার জন্য। তিনি ১০ নভেম্বর, ১৯৩৮ সালে সকাল ৯.০৫-এ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি যেই ঘরে থাকতেন, সেই ঘরেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন, যা বর্তমানে যাদুঘরের একটি অংশ হিসেবে সংরক্ষিত। সে সময় পুরো প্রাসাদের সকল ঘড়ি ৯.০৫ এ বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা আর চালু করা হয় নি। কিন্তু পরবর্তীতে পুরাতন ঘড়িগুলোর পাশাপাশি নতুন ঘড়ি লাগানো হয়। তবে পুরাতন ঘড়িগুলো এখনো ৯.০৫-এ বন্ধ আছে।

ভিজিট আওয়ার

দলমাবা’চ প্রাসাদ যাদুঘরটি সরকারী ছুটির দিন (সোমবার ও বৃহস্পতি বার ব্যতীত) সকাল ৯.০০ থেকে বিকাল ৪.০০ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

  • Dolmabahce Palace history, photos, opening hours and opinions
  • Dolmabahçe Palace official site
  • National Palaces in Turkey official site

Text submitted to CC-BY-SA license. Source: দোলমাবাহজে প্রাসাদ by Wikipedia (Historical)


Langue des articles



Quelques articles à proximité