Aller au contenu principal

ক্রাইসলার বিল্ডিং


ক্রাইসলার বিল্ডিং


ক্রাইসলার বিল্ডিং বা ক্রাইসলার ভবন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ম্যানহাটন এলাকার মিডটাউন অংশের পূর্ব পার্শ্বে (ইস্ট সাইড), লেক্সিংটন অ্যাভিনিউ রাজপথ ও ৪২নং স্ট্রিট সড়কের সংযোগস্থলে অবস্থিত আর দেকো স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত একটি আকাশচুম্বী অট্টালিকা ভবন। এটির উচ্চতা ১,০৪৬ ফুট (৩০৯ মিটার)। এটি ইস্পাতের কাঠামোর উপরে ইট দিয়ে নির্মিত বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন। ১৯৩০ সালে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হবার পর ভবনটি ১১ মাস ধরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন ছিল। এরপর ১৯৩১ সালে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং ভবনটির উচ্চতা অতিক্রম করে যায়। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ক্রাইসলার বিল্ডিং নিউ ইয়র্ক শহরের দ্বাদশ (১২তম) সর্বোচ্চ ভবন ছিল। ভবনটিতে ৭৭টি তলা ও প্রায় ৫ হাজার জানালা আছে। এটি নির্মাণ করতে প্রায় ৩০ হাজার টন ইস্পাত ও ৩৮ লক্ষ ইটের প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে ভবনটি নির্মাণে ১৯২০-এর দশকে প্রায় ২ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয় (২০২০-এর দশকে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার)।

ভূমি-দালান উন্নয়নকারক ও নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের প্রাক্তন উচ্চকক্ষীয় সংসদ সদস্য (সিনেটর) উইলিয়াম এইচ. রেনল্ডস ভবনটির আদি পরিকল্পনাকারী ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মার্কিন মোটরগাড়ি কোম্পানি ক্রাইসলার কর্পোরেশনের প্রধান ওয়াল্টার ক্রাইসলার এটি নির্মাণ করান। ক্রাইসলার বিল্ডিং নিউ ইয়র্ক শহরের শুরুর দিকের আকাশচুম্বী ভবনগুলির একটি। ১৯২০-এর দশকের শুরুতে নিউ ইয়র্ক শহরের অর্থনীতিতে যে অভূতপূর্ব তেজিভাব আসে, তারই প্রেক্ষিতে শহরটিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ অট্টালিকা ভবন নির্মাণের এক প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ম্যানহাটন ব্যাংকের ৪০ ওয়াল স্ট্রিট ভবন ও ক্রাইসলার ভবন ছিল শীর্ষ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী, পরে ১৯২৯ সালে জেনারেল মোটর্সের অর্থায়নে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংও এই প্রতিযোগিতায় যোগদান করে। এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং ১০০০ ফুট ছাড়িয়ে যাবার পরিকল্পনা করেছে জানতে পেরে ক্রাইসলার তার আদি ভবনের উপরে একটি শিখর যোগ করার পরিকল্পনা করেন। নির্মাণকালেই ক্রাইসলার ভবনটি বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থাপনা হিসেবে আইফেল টাওয়ারকে ছাড়িয়ে যায়। যদিও ক্রাইসলার ভবনটিকে মোটরগাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির জন্য বিশেষভাবে নকশা করে নির্মাণ করা হয়, কোম্পানিটি এটির নির্মাণকাজে কোনও অর্থায়ন করেনি এবং কখনও এটির মালিকও ছিল না। ওয়াল্টার ক্রাইসলার সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি নির্মাণ করান, যাতে তাঁর সন্তানেরা এটির উত্তরাধিকার পায়। ১৯৫২ সালে এটির একটি সংলগ্ন ভবন বা অ্যানেক্স নির্মাণ করা হয় এবং পরবর্তী বছরে ভবনটিকে ক্রাইসলার পরিবার বিক্রি করে দেয়। এরপরে ভবনটির মালিকানা বহুবার হাতবদল হয়েছে। ২০২৩ সালে এসে অস্ট্রিয়ার ভূমি-দালান উন্নয়ন কোম্পানি সিগনা বর্তমানে এটির মালিক।

যখন ক্রাইসলার বিল্ডিংকে ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়, তখন এটির নকশা সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। কেউ কেউ নকশাটিকে বোকামি ও অমৌলিক বলে বর্ণনা করেন। অন্যরা এটিকে আধুনিকবাদী ও উৎকর্ষের পরাকাষ্ঠা হিসেবে প্রশংসা করেন। বর্তমানে ভবনটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত ভবনগুলির মধ্যে আর দেকো স্থাপত্যশৈলীর সর্বোৎকৃষ্ট মূর্ত উদাহরণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০০৭ মার্কিন স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিয় স্থাপত্যের তালিকাতে এটি নবম স্থান লাভ করে। ১৯৭৮ সালে ভবনটিকে নিউ ইয়র্ক শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-প্রতীক (ল্যান্ডমার্ক) হিসেবে মনোনীত করা হয় এবং এর আগে ১৯৭৬ সালে এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঐতিহাসিক ভূ-প্রতীক হিসেবে এটিকে দেশটির ঐতিহাসিক স্থানসমূহের জাতীয় নিবন্ধন তালিকাতে যোগ করা হয়। ২০০৫ সালে নিউ ইয়র্কের আকাশচুম্বী ভবন জাদুঘরের একটি ভোটে এটিকে শহরের অধিবাসীদের সবচেয়ে পছন্দের অট্টালিকা হিসেবে নির্বাচিত হয়।

ইতিহাস

১৯২০ এর দশকের মাঝামাঝি নিউ ইয়র্কের মহানগর অঞ্চল লন্ডন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মহানগর এলাকা অতিক্রম করে এবং ১৯৩০ এর দশকের জনসংখ্যা প্রথমদিকে দশ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। যুগের বিবর্তনে সামাজিক ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন হয়েছিল। যেমন রেডিও, সিনেমা এবং অটোমোবাইল হিসাবে ভোক্তা পণ্য - যার ব্যবহার ১৯২০ এর দশকে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছিল । ১৯২৭ সালে ওয়াল্টার ক্রাইসলারের স্বয়ংচালিত সংস্থা, ক্রাইসলার কর্পোরেশন, যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি প্রস্তুতকারক, ফোর্ড এবং জেনারেল মোটরসের পিছিয়ে দিয়ে ছিল । পরের বছর, ক্রাইসলারকে টাইম সাময়িকীর "পার্সন অফ দ্য ইয়ার" বলা হয়। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যায়গার সংকট দূর করতে ক্রাইসলার বিল্ডিং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।


স্থাপত্যশিল্প

ক্রাইসলার বিল্ডিং আর দেকো স্থাপত্যের একটি উদাহরণ হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি ইস্পাতের পরিকাঠামো দ্বারা তৈরি করা হয়েছে যা সজ্জিত ধাতু খাদকগুলি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। কাঠামোতে ৩,৮৬২ বাইরের জানালা রয়েছে। গোথিক ক্যাথেড্রালগুলিতে গার্গিয়ালগুলির স্মরণীয় পাঁচটি মেঝেতে বিল্ডিংয়ের কোণে আনুমানিক পঞ্চাশ মেটাল অলঙ্কারগুলি প্রবর্তিত হয়। ৩১ তম তলাটিতে গার্গয়লগুলি রয়েছে ৫২টি যা ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ক্রাইসলার রেডিয়েটার ক্যাপের প্রতিলিপি ৬১তম তলায় ঈগল আমেরিকার জাতীয় পাখির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ক্রাইসলার সেন্টার

ক্রাইসলার সেন্টারটি হল বিল্ডিং কমপ্লেক্সের নাম যা ক্রাইসলার বিল্ডিং, ক্রাইসলার বিল্ডিং ইস্ট, এবং ক্রাইসলার ট্রিলন নামে পরিচিত বাণিজ্যিক প্যাভিলিয়নের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৯৮ সালে টিশম্যান স্পিয়ার নির্মাণ সম্পর্কে জটিলটি করেছিলেন এবং পরবর্তী দুই বছরে সম্পূর্ণরূপে এটি পুনর্নির্মাণের জন্য এগিয়ে যান।

চিত্র সমাহার

আরও দেখুন

  • ৪০ ওয়াল স্ট্রিট
  • উলঅর্থ বিল্ডিং
  • প্লাজা হোটেল
  • শেলবর্ন হোটেল

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ


Text submitted to CC-BY-SA license. Source: ক্রাইসলার বিল্ডিং by Wikipedia (Historical)


Langue des articles




Quelques articles à proximité

Non trouvé